ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন পরীমণি ও রাজ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একসঙ্গে থাকার শপথও নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেটা সম্ভবত আর হচ্ছে না। তাদের সেই ভালোবাসা বিষাদে রূপ নিয়েছে। হাঁটছেন বিচ্ছেদের পথে। পরীমণি জানান, গেল মে মাসের ২০ তারিখ পরীমণির বাসা থেকে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে গেছেন রাজ। এরপর তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেননি তিনি। তারপর গত ২৯ মে মধ্যরাতে রাজের ফেসবুক থেকে তিশা, তুষি ও সুনেরাহর সঙ্গে তার আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ফাঁস হয়।
এই ঘটনার পর পরীমণিকে সন্দেহ করেন রাজ। সেই সঙ্গে তার সঙ্গে সংসার করতে রাজি নন এ নায়ক। বাসা থেকে বের হওয়া প্রসঙ্গে রাজ দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি বাসা থেকে কেন বেরিয়ে এসেছি, পরী ভালো করে জানে। কীভাবে বেরিয়ে এসেছি, কেন বেরিয়ে এসেছি, তা-ও সে ভালো করে জানে। ওই দিন বাসায় তার ও আমার পরিচালক গুরু গিয়াস উদ্দিন সেলিম ছিলেন। সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন।’
এ বিষয়ে পরীমণি বলেন, ‘রাজ বাইরে ছিল। সেলিম ভাই ও তার বউ তাকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় এসেছিল। সম্ভবত, এটি গত ২০ মের ঘটনা। আসার আগে সেলিম ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, আমি রাজকে সঙ্গে করে নিয়ে তোমার বাসায় আসছি। এসে বলেন, রাজ তো তোমার সঙ্গে থাকতে চায় না। বিচ্ছেদের ব্যাপারে চিন্তা করতে পারো। আমি বললাম, ও আমার সঙ্গে থাকতে চায় না, তাহলে ও–ই আমাকে ডিভোর্স দিক। আমি কেন দিতে যাব।
পরে সেলিম ভাই বললেন, যদি তোমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়, তাহলে বাচ্চাকে দেখভাল করতে কীভাবে কী করবে, চিন্তাভাবনা করে দেখো। এরপর আমি বললাম, বাচ্চা আমার কাছেই থাকবে। তবে বিচ্ছেদ হওয়ার পর অবশ্যই সে বাচ্চা দেখতে আসতে পারবে। তবে শর্ত, সে অস্বাভাবিক সময় বাসায় আসলে বাচ্চাকে দেখতে দেব না। যদি রাত চারটায় আসে, ভোরবেলায় আসে, তাহলে তো বাচ্চা দেখতে দেওয়ার সুযোগই নাই। স্বাভাবিক, সঠিক সময়ে এসে সে বাচ্চা দেখতেই পারে। কোনো সমস্যা নাই।’
পরী আরও বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে ওই রাতে সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক কথা–কাটাকাটি হয়। রাজের সঙ্গেও হয়েছে। কারণ, ওই দিন বিভিন্নজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাজ আমার চরিত্র নিয়েও অনেক কথা তুলেছিল। একটা পর্যায়ে সেলিম ভাই, তার বউসহ রাজ তার সব জিনিসপত্র নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। এরপর আর আসেনি।’
এতদিন তাদের মধ্যে যে ভালোবাসা চলছিল, সেটা লোক দেখানো বলে জানালেন পরীমণি। তার কথায়, ‘এগুলো ছিল রাজের লোক দেখানো। আমার কোনো অনুষ্ঠান থাকলে সঙ্গে সে যেত। বিশ্বাস করেন, কিছুদিন আগে আমি হাসপাতালে ছিলাম, আমাকে দেখতেও যায়নি সে। আমার সঙ্গে তার এখন শারীরিক, মানসিক কোনো অ্যাটাচমেন্টই নাই। আমি যখন হাসপাতালে, তখনই বাসায় রাজ তার জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখেছিল। আগেই প্রস্তুত ছিল বাসা থেকে বেরিয়ে যাবে। সম্পর্ক রাখবে না। এভাবে তো আর সংসার, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।’
তাহলে কি বিচ্ছেদের দিকে যাচ্ছে আপনাদের সংসার— উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, ‘ও তো আমাকে ছেড়েই চলে গেছে, বিচ্ছেদ তো হয়েই গেছে। আমি আর কল্পনাতেও ভাবতে চাই না শরীফুল রাজ আমার জামাই। একটা মানুষ চলে গেলে তো আর ধরে রাখা যায় না।’
এরপর হাসতে হাসতে পরী আরও বলেন, ‘রাজ এখন বলে কী, আমাদের বিয়ের কাবিননামা নাকি ভুল। আমাদের নাকি ঠিকঠিক বিয়েই হয়নি। যে এভাবে বলতে পারে, সে ভয়ংকর মানুষ। তার সঙ্গে থাকা যাবে না। আমি চাই সে আমাকে তালাক দিয়ে দিক। আমি ওর প্রাক্তন, এটাই শুনতে আমার আরাম লাগবে। আমি রাজের বউ, এটি আর শুনতে চাই না।’
এদিকে রাজকে দায়ী করে পরী বলেন, ‘রাজ আমার বাচ্চার বাপ, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। আমরা একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু আমাদের সন্তানের জন্য আফসোস হয়ে থাকবে, বাবা-মাকে নিয়ে সুখী জীবন পাচ্ছে না আমাদের সন্তান। আর এর জন্য দায়ী রাজ। আমাকে দোষ দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এই সংসার টেকানোর জন্য আমি কী পরিমাণ চেষ্টা করে গেছি, রাজও জানে সেটি।’
এখন সন্তানের দিকে তাকিয়ে যদি রাজ পুনরায় ফিরে আসেন, তাহলে তাকে গ্রহণ করবেন না বলে জানালেন পরীমণি। যিনি তার স্ত্রী ও বাচ্চার মায়ের চরিত্র নিয়ে নেতিবাচক কথা বলতে পারেন তার আর ফিরে আসার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।